বিশেষ খবরবিশ্ব

কেনিয়ায় বন্যায় ১২০ জনের প্রাণহানি

 

নাইরোবি, ২৯ নভেম্বর, ২০২৩ (বাসস ডেস্ক) : কেনিয়ার অনেক অংশে ভয়াবহ বন্যায় মৃতের সংখ্যা প্রায় দ্বিগুণ বেড়ে ১২০ জনে পৌঁছেছে। মঙ্গলবার সরকারি কর্মকর্তা এ কথা জানিয়েছেন।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের শীর্ষ কর্মকর্তা রেমন্ড ওমোলো এক বিবৃতিতে বলেছেন, ৮৯,০০০ এরও বেশি পরিবারও বাস্তুচ্যুত হয়ে ১১২টিরও বেশি শিবিরে আশ্রয় নিয়েছে।
কেনিয়া এবং এর হর্ন অফ আফ্রিকার (জিবুতি, কেনিয়া, ইথিওপিয়া,ইরিত্রিয়া, সোমালিয়া, সুদান, দক্ষিণ সুদান) প্রতিবেশী সোমালিয়া এবং ইথিওপিয়া এল নিনোর (এল নিনো হল একটি জলবায়ু প্যাটার্ন যা পূর্ব প্রশান্ত মহাসাগরে পানির অস্বাভাবিক উষ্ণতাকে বুঝায়) আবহাওয়ার প্যাটার্নের সাথে যুক্ত প্রবল বর্ষণের ফলে সৃষ্ট আকস্মিক বন্যার সাথে লড়াই করছে।
এই অঞ্চলে চার দশকের সবচেয়ে খারাপ খরা থেকে উদ্ভূত মানবিক সংকটকে বন্যা আরও বাড়িয়ে তুলছে। এই খরা লক্ষ লক্ষ মানুষকে দুর্ভিক্ষের মুখোমুখি করেছে।
ওমোলো বলেছেন, পূর্ব কেনিয়ার চারটি কাউন্টি সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং আরও ১০টি এলাকা উচ্চ সতর্কতায় রয়েছে।
কেনিয়ার প্রেসিডেন্ট উইলিয়াম রুটো সোমবার দুর্যোগের ওপর জরুরি মন্ত্রিসভার বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় বিলিয়ন বিলিয়ন কেনিয়ান শিলিং (মিলিয়ন ডলার) অর্থ সরবরাহের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
বৈঠকের পর তার কার্যালয় এক বিবৃতিতে বলেছিল, ৭৬ জন কেনিয়ান মারা গেছে এবং ৩৫,০০০ এরও বেশি পরিবার তাদের বাড়িঘর থেকে সরে যেতে বাধ্য হয়েছে।
জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চলগুলোর মধ্যে একটি হচ্ছে হর্ন অফ আফ্রিকা এবং এখানে বারবার আবহাওয়ার চরম বিপর্যয় ঘটছে।
বৃহস্পতিবার দুবাইতে জাতিসংঘের কপ-২৮ জলবায়ু শীর্ষ সম্মেলন শুরুর আগে, রুটো গত সপ্তাহে ইউরোপীয় সংসদে এক ভাষণে সতর্ক করেছিলেন যে আফ্রিকা ‘পরিবেশগত দুর্বলতার শীর্ষে’ রয়েছে।
সেপ্টেম্বরে নাইরোবিতে রুটোর উদ্যোগে আয়োজিত একটি প্যান-আফ্রিকান জলবায়ু সম্মেলনে মহাদেশের নেতারা নবায়নযোগ্য জ্বালানি এবং কার্বন ট্যাক্স বাড়ানোর জন্য বিশ্বব্যাপী অর্থ সংস্কারের আহ্বান জানিয়েছেন।
সোমালিয়া সরকার গত সপ্তাহে বলেছে, আকস্মিক বন্যায় মৃতের সংখ্যা ১০০ এর কাছাকাছি, ৭০০,০০০ এরও বেশি তাদের বাড়িঘর থেকে বিতাড়িত হয়েছে এবং মোট প্রায় দুই মিলিয়ন মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
এই মাসের শুরুর দিকে জাতিসংঘের মানবিক সহায়তা সংস্থা ওসিএইচএ জানিয়েছে, বন্যা, ভারী বৃষ্টিপাত এবং ভূমিধসের ফলে ইথিওপিয়ায় ৪৩ জন মারা গেছে।
যুক্তরাজ্য-ভিত্তিক দাতব্য সংস্থা সেভ দ্য চিলড্রেন মঙ্গলবার এক প্রতিবেদনে বলেছে, জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোতে চরম আবহাওয়ার ঘটনা গত বছর ২৭ মিলিয়নেরও বেশি শিশুকে ক্ষুধার্ত করে তুলেছে।
আইপিসি হাঙ্গার মনিটরিং সিস্টেমের তথ্য অনুযায়ী, ২০২২ সালে চরম আবহাওয়ার কারণে ১২টি দেশে ৫৭ মিলিয়ন মানুষের মধ্যে প্রায় অর্ধেক শিশুই তীব্র খাদ্য নিরাপত্তাহীনতার সংকটের পর্যায়ে ঠেলে দিয়েছে বা আরও খারাপের দিকে ঠেলে দিয়েছে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button