অর্থ ও বাণিজ্যবিনোদন

চৌগাছায় কৃষি অফিসের উদ্যোগে দেশীয় ফল উৎসব


মালিক উজ জামান, যশোর : যশোরের চৌগাছা উপজেলা কৃষি অফিসের উদ্যোগে মধু মাসে দেশীয় ফল উৎসব আয়োজন করা হয়েছে।
সোমবার (২৭ মে) উপজেলা কৃষি অফিসের সভা কক্ষে মধুমাসে বিভিন্ন সুস্বাদু দেশীয় ফল উৎসবে উপস্থিত ছিলেন প্রধান অতিথি হিসেবে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইরুফা সুলতানা, বিশেষ অতিথি ছিলেন ভূমি সহকারী কমিশনার গুঞ্জন বিশ্বাস।
ফল উৎসবে স্বাগত বক্তব্য দেন, উপজেলা কৃষি অফিসার সমরেন বিশ্বাস, বক্তব্য দেন উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসার প্রভাষ চন্দ্র গোসামী, উপজেলা শিক্ষা অফিসার মোস্তাফিজুর রহমান, মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আবুল কালাম রফিকুজ্জামান, উপজেলা মৎস্য অফিসার হরিদাস কুমার দেবনাথ, উপজেলা মহিলা বিষয় অফিসার উম্মে সালমা আক্তার, উপজেলা সমবায় অফিসার অহিদুর রহমান , প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসার ইশতিয়াক আহমেদ, পল্লী উন্নয়ন অফিসার হাবিবুর রহমান, উপজেলা সমাজসেবা অফিসার মেহেদী হাসান, উপজেলা যুব উন্নয়ন অফিসার সুভাষ চন্দ্র চক্রবর্তী, উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার মিজানুর রহমান, সহ বিভিন্ন দপ্তরের অফিসার উপস্থিত ও সুধীজন উপস্থিত ছিলেন। দেশী ফলের মধ্যে উৎসবে ছিল আম-কাঁঠাল, জামরুল, জাম, লিচু, ড্রাগন ফল, পেঁপে, দেশীয় খেজুর, কলা, লেবু, আতা, তাল, পেয়ারা সহ অনেক রকম ফল নিয়ে ফলের মিলন মেলা পরিণত হয়েছে।
অন্যান্য দানাদার খাদ্যশস্য অপেক্ষা দেশি ফলের গড় ফলন অনেক বেশি। সে হারে ফলের মূল্য বেশি হওয়ায় তুলনামূলকভাবে আয়ও অনেক বেশি যেমন-এক হেক্টর জমিতে ধান গম চাষে আয় হয় ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা। অথচ সমপরিমাণ জমিতে কলা ও আম চাষ করে যথাক্রমে আয় হয় ৭৫ হাজার ও ১ লাখ টাকা। বাংলাদেশের জাতীয় অর্থনীতিতে ফলভিত্তিক আয়ের আনুমানিক প্রায় ১০ শতাংশ আসে ফল থেকে। এ থেকে বোঝা যায় জাতীয় অর্থনীতিতে তথা দারিদ্র্য বিমোচনে ফল ও ফলদ বৃক্ষের অবদান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। দেশি ফল উৎপাদন, প্রক্রিয়াজাতকরণ ও রপ্তানিমুখী সম্ভাবনা বিশ্বের ফল বাণিজ্যে বাংলাদেশের অবদান খুবই কম। বিদেশে টাটকা ও প্রক্রিয়াজাতকৃত ফলের প্রচুর চাহিদা থাকা সত্ত্বেও বাংলাদেশ থেকে বর্তমানে সীমিত আকারে টাটকা ফল রপ্তানি হচ্ছে। রপ্তানিকৃত উল্লেখযোগ্য ফলগুলোর মধ্যে কাঁঠাল, আম, আনারস, লেবু, কামরাঙা, বাতাবিলেবু, তেঁতুল, চালতা উল্লেখযোগ্য। টাটকা ফল ছাড়াও হিমায়িত ফল (সাতকরা, কাঁঠাল বীজ, কাঁচকলা, লেবু, জলপাই, আমড়া ইত্যাদি) ইতালি, জার্মানি, সৌদি আরব, কুয়েত, কাতার, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ওমান ও বাহরাইনে রপ্তানি হচ্ছে। যা উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে। এতে ফল রপ্তানিতে ও প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের ক্ষেত্র সৃষ্টি হয়েছে।
বাংলাদেশে ফলের ব্যাপক বৈচিত্র্য রয়েছে এবং এখানে প্রায় ৭০ ধরনের বিভিন্ন প্রজাতির প্রচলিত ও অপ্রচলিত ফল জন্মে, যার ক্ষুদ্র একটি অংশ বাণিজ্যিকভাবে চাষাবাদ হয়। বাংলাদেশে কাঁঠাল, আম, লিচু, লেবুজাতীয় ফল, আনারস, কলা, কুল, পেঁপে, পেয়ারা, নারিকেল প্রধান বা প্রচলিত ফল হিসেবে বিবেচিত। বর্তমানে একজন পূর্ণবয়স্ক ব্যক্তির দৈনিক ফলের চাহিদা ২০০ গ্রামের বিপরীতে প্রাপ্যতা হলো মাত্র ৭৪.৪২ গ্রাম, সারা বিশ্বে ফল একটি আদৃত ও উপাদেয় খাদ্য। ফল বিভাগ, উদ্যানতত্ত্ব গবেষণা কেন্দ্র, বিএআরআই, গাজীপুর এ পর্যন্ত উষ্ণ এবং অবউষ্ণমন্ডলীয় অঞ্চলে চাষোপযোগী ৩০টি বিভিন্ন প্রজাতির ফলের ৬৫টি উন্নত জাত উদ্ভাবন করেছে যেগুলোর অধিকাংশ কৃষক পর্যায়ে সমাদৃত হয়েছে এবং দেশীয় ফলের চাষ সম্প্রসারণসহ উৎপাদন বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। এসব উন্নত জাতের ব্যাপক সম্প্রসারণ হওয়া অপরিহার্য।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button