চট্টগ্রামসংগঠন সংবাদ

বাংলাদেশ রেডক্রিসেন্ট সোসাইটির চেয়ারম্যান হলেন ডাঃ কবীর চৌধুরী

আল হেলাল,সুনামগঞ্জ থেকে : বৃহত্তর সিলেট তথা সুনামগঞ্জের কৃতি সন্তান স্বাধীনতা পুরস্কার প্রাপ্ত বিশিষ্ট চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ ডাক্তার এম ইউ কবির চৌধুরী বিগত ২৮ এপ্রিল  বছর মেয়াদের জন্য বাংলাদেশ রেডক্রিসেন্ট সোসাইটির চেয়ারম্যান মনোনিত হয়েছেন। সোমবার (২৯ এপ্রিলতিনি তার দায়িত্বভার গ্রহন করেছেন।  সোমবার সকালে বাংলাদেশ রেডক্রিসেন্ট সোসাইটির প্রধান কার্যালয়ে তার সাথে সাক্ষাৎ করে নবনির্বাচিত চেয়ারম্যানকে অভিনন্দন  শুভেচ্ছা জানিয়েছেন বাউল কামাল পাশা সংস্কৃতি সংসদ ঢাকা মহানগর কমিটির আহবায়ক সারাবিশ্ব ডটকমের চেয়ারম্যান মোকাম্মেল হোসেন চৌধুরী মেনন।

জানা যায়,অধ্যাপক ডামোউবায়দুল কবীর চৌধুরী ১৯৫১ সালের ৩০ ডিসেম্বর সুনামগঞ্জের দিরাইএর ভাটিপাড়া গ্রামের সম্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন।তিনি মরহুম গোলাম কাদীর চৌধুরী  মরহুমা রোকেয়া কাদীর চৌধুরীর তৃতীয় সন্তান।তাঁর বাবা প্রথম শ্রেণীর সরকারি কর্মকর্তা ছিলেন। অধ্যাপক কবীর চৌধুরী সেরা ছাত্র হিসেবে স্কুলে ট্যালেন্ট পুলে বৃত্তিসহ এস.এস.সি পাশ  ১৯৬৮৬৯ সালে জগন্নাথ কলেজঢাকা থেকে এইচ.এস.সি.-তে ১ম বিভাগে উত্তীর্ণ  বোর্ড বৃত্তি লাভ করেন।উক্ত কলেজে পড়াকালীন সময়ে সরাসরি ছাত্রলীগ রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।জগন্নাথ কলেজ হল ছাত্র সংসদ ইলেকশনে সর্বোচ্চ ভোট পেয়ে সদস্য নির্বাচিত হন। উল্লেখ্য যে১৯৬৫ সনে তাঁর অগ্রজ ফজলুল কাদীর চৌধুরী বর্তমানে সোহরাওয়ার্দী কলেজে (তদানিন্তন কায়েদে আজম কলেজ)ছাত্রলীগ থেকে ছাত্র সংসদের সমাজকল্যাণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। অধ্যাপক কবীর চৌধুরী ১৯৬৮ সালে ঢাকা মেডিকেল কলেজে ভর্তি হন এবং উক্ত কলেজে একই ধারায় ছাত্রলীগ রাজনীতিতেসম্পৃক্ত হন এবং একজন কর্মী হিসেবে প্রত্যেকটি দলীয় কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করেন। ঢাকা মেডিকেল কলেজে পড়াকালীন সময়ে ৬৯ এর গণ আন্দোলন১১ দফা ছাত্র আন্দোলন এবং বঙ্গবন্ধুর  দফা আন্দোলনের সাথে একাত্বতা ঘোষণার সময় প্রতিটি প্রোগ্রামে তিনি অংশগ্রহণ করেন। আগড়তলা মামলা চলাকালীন সময়ে তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজের ছাত্র ছিলেন এবং সেই সময় সার্জেন্ট জহুরুল হক বন্দি থাকা অবস্থায় ১৫ ফেব্রæয়ারি ৬৯ সালে পাক বাহিনির গুলিতে নিহত হন। রাত ১২টায় উক্ত সংবাদ পাওয়ার পর তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজের হোস্টেল থেকে ছাত্রদের একত্রিত করে প্রতিবাদ মিছিল নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঢাকা হলফজলুল হক হল থেকে সকল ছাত্র মিলে শহীদ মিনারে এসে রাত  টায় একটি প্রতিবাদ সভায় তিনি সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন। সার্জেন্ট জহুরুল হকের লাশ মর্গে নিয়ে আসা হয় এবং পরবর্তীতে আজিমপুর কবরস্থানে দাফন করার জন্য নেওয়া হয়। উক্ত স্থানে তিনি উপস্থিত থাকেন এবং তখন উক্ত বীর সেনানীকে কবরে নামানোর জন্য তিনি প্রথমেই কবরে নামেন এবং পরবর্তীতে আরও তিন জন নেমে দাফন কাজ সম্পন্ন করেন। পরবর্তী পর্যায়ে আগড়তলা মামলা থেকে বঙ্গবন্ধুকে মুক্তি দেওয়ার পর মহান নেতা যখন শহীদ মিনারে আসেন সেই সভায়ও তিনি উপস্থিত ছিলেন। ১৯৭০ সনে মেডিকেল ছাত্র হিসাবে বর্ষিয়ান জননেতা আব্দুস সামাদ আজাদএর সাথে ভাটিপাড়া গমন করেন এবং তাঁর নেতৃত্বে তখনকার ইউনিয়ন কাউন্সিলের চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে আওয়ামী লীগ গঠন এবং ৭০ –এর নির্বাচনে উক্ত নেতার নির্বাচন প্রচারে সরাসরি অংশগ্রহণ করেন। উক্ত নির্বাচনে জনাব আব্দুস সামাদ আজাদ নিরঙ্কুশ সংগরিষ্ঠতা নিয়ে এম.এন. নির্বাচিত হন। ৭০ সনে বঙ্গবন্ধু লাহোর ডাকএর গোল টেবিল বৈঠক থেকে যখন ঢাকা ফেরেন তখন তিনি তেজগাঁও বিমান বন্দরে হাজার জনতার মধ্যে পি.আই. –এর জরুরী গেট দিয়ে বঙ্গবন্ধু বের হওয়ার সময়ও তিনি উপস্থিত ছিলেন এবং তিনি উক্ত গাড়িবহরে নেতার সঙ্গে শহীদ মিনারে আসেন। ১৯৭১ সালের ৭ই মার্চের রেসকোর্সের ময়দানে বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক জনসভায় ঢাকা মেডিকেল কলেজের ছাত্রলীগের বেশকিছু সংখ্যক ছাত্রসহ তিনি সেই সভায় প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত উপস্থিত ছিলেন। বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ভাষণে সব কিছু বন্ধ করার ঘোষণা শুনে তিনি ভাটিপাড়া নিজ গ্রামে গমণ করেন এবং সেখানে গিয়ে বিভিন্ন সময়ে ভাটিপাড়া গ্রামের স্কুল কলেজের ছাত্রদের সঙ্গে দেশজাতি এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতা নিয়ে বিভিন্ন পরামর্শ করেন। ২৫শে মার্চ রাতে পাকিস্তানি সেনাদের বর্বরতার ঘটনা শোনার পর তিনি ২৬শে মার্চ তারিখ ভোরে ভাটিপাড়া গ্রামের ছাত্র জনতাকে নিয়ে প্রতিবাদ মিছিল  সভা করেন এবং  রাতেই ভাটিপাড়ায় বাংলাদেশ স্বাধীনতা সংগ্রাম পরিষদ গঠন করেন। যখন মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয় তখন পাকিস্তান নৌবাহিনীর সদস্য আব্দুল মজিদ চৌধুরীর মানিক মিয়ার নেতৃত্বে ভাটিপাড়া গ্রামের মুক্তিযোদ্ধাদের সংগঠিত করে ভাটিপাড়া হাইস্কুলে একটি অস্থায়ী চলমান ক্যাম্প স্থাপন করা হয় এবং তখনকার চলমান মুক্তিযুদ্ধে এলাকার মেডিকেল স্টুডেন্ট হিসাবে আহত মুক্তিযোদ্ধাদের চিকিৎসার ভার তিনি গ্রহণ করেন। তিনি তখনকার বিপদসংকুল পরিস্থিতিতেও নিজ গ্রামে অবস্থান করেন এবং তাঁর আত্মরক্ষার জন্য তিনি তাঁহার প্রয়াত পিতার বন্ধুকটি সার্বক্ষণিক সঙ্গে রাখতেন। উক্ত বন্দুকটি নয় মাস মুক্তিযুদ্ধের একটি অনন্য স্মারক হিসাবে তাঁর কাছে এখনও রক্ষিত আছে। যা মুক্তিযোদ্ধা জাদুঘরে দেওয়ার অভিপ্রায় আছে। তিনি মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে একজন সিনিয়র মেডিকেল শিক্ষার্থী  মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক হিসাবে ভাটিপাড়া ইউনিয়ন  তৎসংলগ্ন এলাকা সম্পূর্ণ দখলদার মুক্ত রাখতে মুক্তিযোদ্ধাদের সহায়তা করেন এবং উক্ত ইউনিয়নে প্রবেশের জন্য পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী দুইটি অপারেশন পরিচালনা করলেও সফলকাম হতে পারেনি। ঐদিন ঝড়ের রাতে তিনি সাতজন গ্রামবাসী নিয়ে বর্তমান শান্তিগঞ্জ উপজেলার পাথারিয়া ইউনিয়নের বাবনিয়া গ্রামে সম্মুখযুদ্ধে শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধা আরশ আলীর নামাজে জানাজা  সমাহিত করার ব্যবস্থা করেন এবং একই যুদ্ধে আহত বীর মুক্তিযোদ্ধা এসএনএম মাহমুদুর রসুলসহ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন। মেডিকেলের ছাত্র থাকার সুবাদে তিনি ভাটিপাড়া হাইস্কুলে একটি অস্থায়ী ক্যাম্পে স্ব

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button