লাইফস্টাইলশীর্ষ নিউজ

উচ্চ রক্তচাপ একটি নীরব ঘাতক

উচ্চ রক্তচাপ হল একটি নীরব ঘাতক। প্রাথমিক স্টেজে এটি উদঘাটন করে এর চিকিৎসা করা জরুরি। হাইপারটেনশন নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য নিয়মিত শরীর চর্চা ও ধূমপান, মদ্যপানের মত বদ অভ্যাস ত্যাগ করতে হবে। বর্তমানে দেশে ডায়াবেটিকের চেয়ে ব্লাড প্রেসারের রোগী বেশি। কিন্তু সে তুলনায় ব্লাড প্রেসারের বিষয়ে খুব বেশি সচেতনতা মানুষের মাঝে পরিলক্ষিত হচ্ছে না।

সোমবার দুপুরে চট্টগ্রাম ইন্টারন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল (সিআইএমসিএইচ) এর উদ্যেগে কলেজ অডিটোরিয়ামে ওয়ার্ল্ড হাইপারটেনশন ডে উপলক্ষে আয়োজিত বৈজ্ঞানিক সেমিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন।

এবারের প্রতিপাদ্য বিষয় ‘সঠিকভাবে ব্লাড প্রেসার মাপুন, নিয়ন্ত্রণে রাখুন ও দীর্ঘ জীবনগঠন করুন’। প্রতি বছরের মতো এবারও সারা পৃথিবীজুড়ে পালিত হচ্ছে ওয়ার্ল্ড হাইপারটেনশন সচেতনতা সপ্তাহ।

সিআইএমসিএইচএর পরিচালক ও মেডিসিন বিভাগের প্রধান অধ্যাপক মো. আমির হোসাইনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ হাইপারটেনশন ও হার্ট ফেইলিউর ফাউন্ডেশনের সভাপতি অধ্যাপক ডা. প্রবীর কুমার দাস, বিশেষ অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের কার্ডিওলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ক্লিনিক্যাল ও ইন্টারভেনশনাল কার্ডিওলজিস্ট ডা. মো. ইব্রাহীম চৌধুরী।

এতে বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম ইন্টারন্যাশনাল মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. মো. টিপু সুলতান, ডেভেলপমেন্ট ফর এডুকেশন সোসাইটি এন্ড হেলথের সেক্রেটারি অধ্যাপক ডা. মো. মুসলিম উদ্দিন।

বৈজ্ঞানিক সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সিআইএমসিএইচএর মেডিসিন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. মেহেরুন্নিছা খানম ও কার্ডিওলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. আখতারুল ইসলাম চৌধুরী।

ওয়ার্ল্ড হাইপারটেনশন সচেতনতা সপ্তাহ ও বিশ্ব উচ্চ রক্তচাপ দিবস উপলক্ষে চট্টগ্রাম ইন্টারন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বিশেষ সেবা সপ্তাহের উদ্বোধন করা হয়।

প্রধান অতিথি অধ্যাপক ডা. প্রবীর কুমার দাশ বলেন, উচ্চ রক্তচাপ নিজেই হাইপারটেনশন সৃষ্টি করে। হাইপারটেনশন মানুষের বিভিন্ন অঙ্গহানী ঘটায়। মানুষ ডায়াবেটিককে যেভাবে ভয় পায় হাইপারটেনশনকে সেভাবে ভয় পায় না। যদিও বর্তমানে হাইপারটেনশন ডায়াবেটিকের চেয়ে কমন একটি রোগ। তাই প্রেসার কমানোর উপর সবচেয়ে বেশি জোর দিতে হবে।

তিনি বলেন, মাস্কড হাইপারটেনশনের চিকিৎসা বাধ্যতামূলক ও হোয়াইট কোট হাইপারটেনশনকে ফলোআপে রাখা প্রয়োজন। প্রেসার নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য লবণের ব্যবহারও কমাতে হবে।

অধ্যাপক ডা. মো. ইব্রাহীম চৌধুরী বলেন, বর্তমানে সরকার বøাড প্রেসারের রোগীদের জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স বিশেষ চিকিৎসা ব্যবস্থা ও ফ্রি ওষুধের ব্যবস্থা করেছে। এ বিষয়ে মানুষের মাঝে সচেনতা বাড়ানো উচিত।

ডা. মেহেরুন্নিছা খানম বলেন, উচ্চ রক্তচাপ এমন একটি নীরব ঘাতক, যা কোনো উপসর্গ ছাড়াই হৃদযন্ত্র, কিডনি, মস্তিষ্কসহ শরীরের বিভিন্ন অঙ্গে আঘাত হানে। তাই এ ব্যাপারে সবাইকে সতর্ক ও সচেতন থাকা জরুরি।

ডা. আখতারুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধে সুস্থ ও সুষম খাদ্য খ্যাদ্যাভাস ও নিয়মিত শরীর চর্চা করতে হবে।

সেমিনার শেষে ‘মাস্কড হাইপারটেনশন’ সম্পর্কিত গবেষণার মূল গবেষক ডা. মেহেরুন্নিছা খানম এবং তার গবেষণা দলকে প্রতিষ্ঠানের ডিভিশন অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যাফেয়ার্স এন্ড রিসার্চের পক্ষ থেকে পাঁচটি ডিজিটাল ব্লাড প্রেসার মেশিন প্রদানের মাধ্যমে গবেষণার কার্যক্রম ঘোষণা করা হয়।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button